পুঠিয়া পরেশ নারায়ন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়

Brief History

পুঠিয়া পরেশ নোয়ান (পপ, এন) স্কুলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

পুঠিয়া পরেশ নোয়ান স্কুল একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যা দীর্ঘকাল ধরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠান অসংখ্য গুণী শিক্ষার্থী ও সম্মানিত শিক্ষকদের পথচলার সাক্ষী হয়েছে।

১৮৬৭ সালে, একজন বিদগ্ধ শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষানুরাগী এই স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় জনগণের জন্য উচ্চমানের শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সুযোগ করে দেওয়া।

স্কুলের ইতিহাস ও প্রতিষ্ঠার পটভূমি

রাজা নরেশ নারায়ন
মহারাণী হেমন্ত কুমারী (মাঝে)

পুঠিয়ার শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে জমিদার শ্রেণির অবদান অনস্বীকার্য। পুঠিয়া জমিদার পরিবার, বিশেষত নওয়ান পরিবার, এই অঞ্চলের শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জমিদার নওয়ান পরিবার শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে একটি মানসম্পন্ন স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়, যা আজকের পুঠিয়া পরেশ নোয়ান স্কুল হিসেবে পরিচিত।

প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে স্কুলটি শুধুমাত্র স্থানীয় ছাত্রদের জন্য ছিল, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। শিক্ষার প্রসার এবং গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একাধিকবার প্রতিষ্ঠানটির কাঠামোগত ও পাঠ্যক্রমগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নামকরণের পেছনের গল্প

প্রাথমিকভাবে এই অঞ্চলের নাম “লস্করপুর” ছিল, যা পরে পরিবর্তিত হয়ে পুঠিয়া হয়। এটি ধারণা করা হয় যে, এখানকার জমিদার পরিবারের এক সদস্য ধর্মীয় কারণে জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এবং দায়িত্ব গ্রহণ করেন স্থানীয় এক ব্রাহ্মণ পরিবারের সদস্য। তিনি ধীরে ধীরে এলাকার প্রশাসনিক এবং সামাজিক কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠেন।

একসময় এই জমিদার পরিবারে কোনো পুরুষ উত্তরসূরি না থাকায় জমিদারির মালিকানা পরিবারের কন্যাদের ওপর ন্যস্ত হয়, যা স্থানীয় সামাজিক কাঠামোতে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। এই সময়কালে শিক্ষার প্রসার এবং জ্ঞানচর্চার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে জমিদার পরিবার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে, যা পরে “পুঠিয়া পরেশ নোয়ান স্কুল” নামে পরিচিতি লাভ করে।

ঐতিহ্য এবং বর্তমান অবস্থা

পুঠিয়া পরেশ নোয়ান স্কুল আজও তার গৌরবময় ঐতিহ্য বহন করে চলছে। অসংখ্য গুণী ব্যক্তিত্ব এই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র, যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নত করার জন্য প্রশাসন এবং শিক্ষকরা নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন।

বর্তমানে, পুঠিয়া পরেশ নোয়ান স্কুল আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যাতে শিক্ষার্থীরা যুগোপযোগী জ্ঞান অর্জন করতে পারে। ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটি আরও উন্নত শিক্ষার সুযোগ তৈরি করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

উপসংহার

পুঠিয়া পরেশ নোয়ান স্কুল শুধুমাত্র একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়; এটি একটি ঐতিহ্যের অংশ, যা শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। এই ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এখান থেকে মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং আলোকিত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।